বৃহস্পতিবার ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ - ১২:০০

হাওজা নিউজ এজেন্সি, আয়াতুল্লাহ সৈয়দ মুজতাবা হুসাইনি ইসলামী বিপ্লবের সাফল্যকে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিরোধ আন্দোলন ও ইসলামী জাগরণের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং এ বিষয়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি হাওযা নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসলামী বিপ্লবের অর্জন এতই ব্যাপক যে, তা বিশদভাবে আলোচনা করতে গেলে এক বিশাল গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান অর্জন হলো মুসলিম বিশ্বে প্রতিরোধের সংস্কৃতি এবং ইসলামী জাগরণ ছড়িয়ে দেওয়া।

ইসলামী বিপ্লবের প্রভাব ও প্রতিরোধ আন্দোলনের উত্থান

তিনি উল্লেখ করেন যে, ইসলামী বিপ্লবের আগে বিশ্বব্যাপী কোনো জনপ্রিয় গণআন্দোলন এত শক্তিশালী ও ব্যাপকভাবে সংঘটিত হয়নি। এই বিপ্লব এমন শক্তি অর্জন করেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন থাকা সত্ত্বেও শাহকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ফলে, এটি মুসলিম সমাজের জন্য একটি নতুন মডেল হয়ে ওঠে।

আঞ্চলিক প্রতিরোধ আন্দোলনে ইসলামী বিপ্লবের ভূমিকা

আয়াতুল্লাহ হুসাইনি বলেন, লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন সরাসরি ইরান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে, আর ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনও ইসলামী বিপ্লবের প্রভাবে তাদের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে। বিপ্লব-পূর্ব ফিলিস্তিনি আন্দোলন কেবলমাত্র সীমিত লড়াই ও অভ্যন্তরীণ কাজকর্মে সীমাবদ্ধ ছিল, এবং স্বাধীন ফিলিস্তিনের ধারণা দুর্বল ছিল। কিন্তু ইসলামী বিপ্লব এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়, এবং পুরো ফিলিস্তিনের মুক্তির ডাক ব্যাপকভাবে প্রতিধ্বনিত হয়।

তিনি আরও বলেন, ইরান সবসময় লেবানন ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনের পাশে থেকেছে এবং এই সমর্থন তাদের দীর্ঘমেয়াদী সংগ্রাম ও দখলদারদের বিরুদ্ধে অবস্থান বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ইসলামী প্রতিরোধের শক্তিশালী ভিত্তি

আয়াতুল্লাহ হুসাইনি বলেন, নিঃসন্দেহে মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনগুলি ইসলামী বিপ্লব থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছে এবং গত চার দশকে ইরানের সহায়তা ও অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হয়েছে। আজ আমরা দেখছি যে, প্রতিরোধ আন্দোলন দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে, এর সংগঠন আরও দৃঢ় হচ্ছে। যদিও মাঝে মাঝে চ্যালেঞ্জ বা আঘাত আসে, কিন্তু এসব প্রতিরোধের অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি; বরং এটি আরও সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হয়েছে।

অবরোধ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইরানের দৃঢ় অবস্থান

তিনি আরও বলেন, ইসলামী বিপ্লবের শুরু থেকেই ইরান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে। যদিও শুরুতে এসব নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, কিন্তু ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো সবসময় ইরানকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইরানের সম্পদ জব্দ করে রেখেছে, যার মূল্য ছিল অত্যন্ত বেশি।

তবে ইসলামী বিপ্লব অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা ও জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে এই চাপ মোকাবিলা করেছে এবং এখনও উন্নতির পথে অগ্রসর হচ্ছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha